জুয়েল, নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রামে আন্ত:জেলা গরু চোর চক্রের একাধিক প্রধান ও চোরাই গরুর ক্রেতা, কসাইসহ ২০ জনের তথ্য পেয়েছে পুলিশ। গরু চোর চক্রের প্রধান আব্দুল মজিদকে গত বুধবার আশুলিয়ার সাভার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চোর চক্রের প্রায় ২০ জন সদস্যের তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছেন নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন।

ওই সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে বগুড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় চুরির পর অভিনব কৌশলে একাধিক কাভারভ্যানে করে চোরাই গরুগুলো নিয়ে যায়। পরে আশুলিয়ার জিরানীতে গরু জবাই করে মাংস বিক্রয় করে আসছে। নন্দীগ্রাম উপজেলায় গরু চুরির ঘটনা হঠাতই বেড়ে যাওয়ায় গত ৬ মাস ধরে চোর চক্র সনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে পুলিশের চৌকস টিম তৎপর হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংএ ওসি জানান, গত ২০২২ সালের ১৮ জুন উপজেলার তেঘর গ্রামের শিহাব আলীর বাড়ি থেকে ৪টি গরু চুরির ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হলে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।

নিবির ও প্রযুক্তির ব্যবহারে সক্রিয় আন্ত:জেলা চোর চক্রের সন্ধান মেলে। প্রতিনিয়ত মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে চোর চক্রের সদস্যদের অবস্থান সনাক্তের চেষ্টা করে দেখা যায়, যেদিন যে এলাকায় তারা অবস্থান করে, সেই এলাকাতেই গরু চুরির ঘটনা ঘটে। চোর চক্রের কয়েকজন সদস্যকে সনাক্ত করার পর অভিযানে নামে পুলিশ।

চোর সিন্ডিকেট প্রধান আব্দুল মজিদসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বুড়িগঞ্জ মাশইল এলাকা থেকে দুটি চোরাই গরু উদ্ধার ও গাবতলীর সন্ধ্যা-বাড়ি ফিলিং স্টেশন এলাকা থেকে চোরাই কাজে ব্যবহৃত একটি কাভারভ্যান (ঢাকা মেট্রো-ন ১৩-২৮৭৭) সহ একটি তালা কাটার মেশিন-রশি জব্দ করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- নন্দীগ্রাম উপজেলার রণবাঘা টিটিগাড়ীর আহাদ আলী বারুর ছেলে চোর সিন্ডিকেট প্রধান আব্দুল মজিদ (৪৬), চোর চক্রের সদস্য কামুল্যা গ্রামের মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে ফারুক হোসেন (২৭), জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার আলাদীপুর নয়াপাড়ার মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে তারাজুল ইসলাম (৪৫), রাজশাহীর পুঠিয়ার কাছুপাড়ার মৃত আজগর আলীর ছেলে আব্দুল আজাদ (৪৫)।

ওসি আনোয়ার আরও জানান, শীত বেড়ে যাওয়ায় এ উপজেলায় ফের গরু চুরির ঘটনা বেড়ে যায়। গত ১ জানুয়ারি উপজেলার শহরকুড়ি এলাকার লুৎফর রহমানের গোয়ালঘর থেকে ৩টি গরু চুরি হয়। এই ঘটনার সঙ্গে গ্রেফতারকৃতরা সরাসরি সম্পৃক্ত।

তারা একই রাতে বগুড়া সদর ও শাজাহানপুর থানা এলাকা থেকেও গরু চুরি করে। দুটি চুরির মামলায় গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। চোর সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।